• শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

কুমিল্লার বরুড়ায় ছাত্রলীগের ক্যাডাররা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বসত বাড়ীতে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে তার বাবা হাফেজ আহমদকে তোলে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৭৯ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

স্টাফ রির্পোটার
লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন এমন খবরের কারনে কুমিল্লার বরুড়ায় ছাত্রলীগের ক্যাডাররা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বসত বাড়ীতে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে তার বাবা হাফেজ আহমদকে তোলে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) আনুমানিক বেলা ১১ টার দিকে বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ী ইউনিয়নের ফলকামুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।জানা গেছে, কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ী ইউনিয়নের ফলকামুড়ি গ্রামের হাফেজ আহমদ এর ছেলে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বর্তমানে সে লন্ডনে বসবাস করছেন। তিনি বাংলাদেশে অবস্থানকালে দীর্ঘ সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি করেছিলেন। সে কারনে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে তিনি আওয়ামী লীগ কর্তৃক ষড়যন্ত্র ও নোংরা রাজনীতির স্বীকার হয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। দেশে আসার ইচ্চা থাকলেও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রেরনকৃত হুমকির কারনে দেশে আর ফিরতে পারেননি।সম্প্রতি গত ১৯ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে ইকবাল হোসেনের বৃদ্ধা মা ইন্তেকাল করেছেন। মা এর ইন্তেকালের পূর্বে তাকে দেখতে দেশে আসতে ছেয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রলীগের ক্যাডারা বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো। এরই ধারাবহিকতায় গতকাল বেলা ১১ টার দিকে স্থানীয় প্রভাবশালী চেয়ারম্যানসহ ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ইকবালের প্রেপ্তার ও ফাসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল দিয়ে ইকবালের বাড়িতে পুরনায় ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এই সময় বাধা দিলে তার বাবা হাফেজ আহমদকে তোলে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তার বাবা হাফেজ আহমদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরুড়া ৫০ শয্যা হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তার বাবা হাফেজ আহমদ এর মাথায় গুরুতর আঘাতসহ হাত ও পা ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় হাফেজ আহমদ বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এছাড়া মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের স্ত্রী সন্তানরাও তার নিজ বাড়িতে বসবাস করতে পারছে না। তার সন্তানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও যেতে পরাছে না। তার পরিবারের সদস্যরাও অন্ন এলাকায় তথ্য গোপন রেখে অস্থায়ীভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছে। যে কোন মুহুর্তে তাদেরকেও অপহরন ও গুম করে ফেলতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের জানুয়ারী ১০ তারিখ রাজনৈতিক দ্বন্দে আদ্রা ইউনিয়নের একবাড়িয়া এলাকার আওয়ামীলীগীগের অফিস ভাংচুরের অভিযোগ এনে ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে বরুড়া থানা পুলিশ। মামলা নং-২৪/২০১৫। ওই মামলার বাদী ছিলেন ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতা। ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ দ্রতু বিচার ট্রাইবনাল আইনে একতরফিয়া রায় প্রদান করে। এছাড়াও ওই মামলায় ওয়ারেন্টুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সে কারনে তার ঘরের সকল আসবাপত্র ক্রোক তামিল করার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করে ২০২৩ সালের অক্টোবরের ১০ তারিখে বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি ইউনিয়নের আমড়াতলী বাজারে আওয়ামীলীগের নেতারা মাববন্ধন করেন। ওই মানববন্ধনে তারা ইকবাল হোসেনকে জামাত,বিএনপির কুখ্যাত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী আখ্যায়িত করে তার দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান।এছাড়াও ২০২৪ সালের জানুয়ারীর ১৫ তারিখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা ইকবালের বসত বাড়ী দখল করে নিয়েছিলো। তৎকালিন সময় কর্মরত বরুড়া থানা অফিসার ইনর্চাজ ওই ঘটনায় কোন মামলা নেননি। মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, ছাত্রদলের রাজনীতি করায় তার জন্য কাল হয়েছে। যার কারনে সে মিথ্যা মামলার স্বীকারসহ হওয়াসহ শারিরীকভাবে রাঞ্চিত হয়েছে। পরবর্তীতে ইকবাল আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারীতে একটি বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টা মামলার ফেরারী আসামী হয়ে আত্নগোপনে চলে যান। তিনি প্রথমে ২০১৫ সালের মে মাসের ৮ তারিখ বাংলাদেশ থেকে কাতারের পালিয়ে যান। পরবর্তীতে মায়ের অসুস্থ্যতার খবর শুনে গোপনে ২০২২ সালের মে মাসের ০১ তারিখে দেশে আসেন। দেশে এসে তিনি বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি। বাড়িতে বিভিন্ন জায়গা থেকে হুম ধমকি আসায় তিনি ২০২২ সালের ২৫ আগস্টে দেশ ত্যাগ করে কাতার হয়ে তুরকিতে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি তুরকি থেকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ লন্ডনে চলে যান। ২০২৩ সালেও তিনি বাড়িতে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিবেশ অনুকুলে না থাকার কারনে এবং গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর ঝুকি থাকার কারনে তিনি বাড়িতেও ফিরতে পারছেন না। এ বিষয়ে বরুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরী বলেন তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। শুনেছি সে দেশে ফিরবে। আমরা তাকে আহ্বান করছি সে যেনো আদালতে আত্নসমর্পন করে। তবে, ইকবাল হোসেনের বাড়ীতে ভাংচুর ও তার বাবাকে মারধরের ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে গনমাধ্যম কর্মীদের জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ