কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী, মুক্তি যুদ্ধের কণ্ঠসৈনিক এবং ওস্তাদ মিহির লালা সাহা আর নেই, পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ নিজ বাসায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
মিহির লালার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তারই শিষ্য তরুণ সংগীতশিল্পী কিশোর দাস। মিহির লালা দুই বাংলার অন্যতম শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী এবং অনেক বিখ্যাত শিল্পীর গুরু। সংগীত সাধনায় পার করেছেন অর্ধশত বছরের বেশি সময়।
১৯৪১ সালে মিহির লালার জন্ম কক্সবাজারে। তবে বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ার পোপাদিয়া গ্রামে। আইনজীবী চন্দ্র বিনোদ লালা ও কুলদাবালা লালার আট সন্তানের মধ্যে মিহির লালা তৃতীয় সন্তান। সংগীতে হাতেখড়ি ওস্তাদ আবু বক্কর সিদ্দিকীর কাছে। এরপর তালিম নিয়েছেন উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীত গুরুদের কাছে। সবশেষে পণ্ডিত বারীন মজুমদারের সান্নিধ্যে এসে হয়ে ওঠেন শাস্ত্রীয় সংগীত জগতের অন্যতম নক্ষত্র।
অল ইন্ডিয়া মিউজিক কলেজ থেকে ‘প্রফেসর অব ক্লাসিক্যাল মিউজিক’ ডিগ্রি লাভ করা এই শিল্পী মৃত্যুর আগপর্যন্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষীয় সংগীত শিক্ষাকেন্দ্র ‘আর্য্য সংগীত সমিতি’ ও ‘সুরেন্দ্র সংগীত বিদ্যাপীঠ’–এ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক হিসেবেও যুক্ত ছিলেন মিহির লালা। ২০১৮ সালে তাকে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমি পদক প্রদান করা হয়।
বলা দরকার, ওস্তাদ মিহির লালা সাহার স্ত্রী জয়ন্তী লালা নজরুল সংগীতশিল্পী। মেয়ে চন্দ্রিমা লালা ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীতে ডিগ্রি নিয়েছেন। ছেলে সুমন লালা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী।