ইরানের বিপ্লবী আদালত শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নার্গেস মোহাম্মদীকে অতিরিক্ত ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। মোহাম্মদী ইতিমধ্যে ১২ বছর কারাগারে একাধিক সাজা ভোগ করেছেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
নার্গেস মোহাম্মাদীর পরিবার এই রায়ের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ২০২১ সালের মার্চ থেকে পঞ্চমবার তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন। সর্বশেষ বিচারে তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না এবং তাঁর অনুপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করা হয়।
নার্গেস মোহাম্মদী কয়েক দশক ধরে ইরানে মানবাধিকার নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। এই কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি দুই দশক ধরে কারাগারে ছিলেন। তাঁকে ১৩ বার গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত মাস কারাগারে থাকার পাশাপাশি, নতুন সাজায় মোহাম্মদীকে তেহরানের বাইরে দুই বছর নির্বাসনে থাকার আদেশ দেন আদালত। ফলে তাঁকে এখন কুখ্যাত এভিন কারাগার থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। যেখানে তিনি বর্তমানে বন্দি রয়েছেন। রায়ে আরো বলা হয়েছে, সাজা কাটানোর পর মোহাম্মদী দুই বছরের জন্য বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্যপদ এবং মোবাইল ফোন রাখা তাঁর নিষিদ্ধ করা হবে।
৫১ বছর বয়সী এই মানবাধিকার কর্মী অসংখ্য হুমকি এবং গ্রেফতার সত্ত্বেও তার কাজ চালিয়ে গেছেন।
ইরানে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছেন।তার সন্তানেরা অক্টোবরে অসলোর সিটি হলে তাঁর পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করে যদিও তারা অনেক বছর ধরে তাদের মাকে দেখেনি।
শিশুরা তাদের মায়ের দেওয়া একটি বিবৃতি পড়ে শোনায় যা কারাগার থেকে পাচার করা হয়েছিল। যেখানে মোহাম্মদি ইরানের অত্যাচারী সরকারের নিন্দা করেছিলেন।
তিনি বলেন, আমি একটি কারাগারের উঁচু, ঠান্ডা দেয়ালের আড়াল থেকে এই বার্তাটি লিখছি। ইরানের জনগণ, অধ্যবসায়ের সঙ্গে, দমন-পীড়ন ও কর্তৃত্ববাদকে জয় করবে।
তিনি হিজাব না পরার অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর গত বছর শুরু হওয়া বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে, মিসেস মোহাম্মদি বলেন, তরুণ ইরানিরা রাস্তা এবং জনসাধারণের স্থানগুলোকে নাগরিক প্রতিরোধের জায়গায় রূপান্তরিত করেছে।