• শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে আওয়ামী লীগ

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৮০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিকল্প চ্যানেলে কাজ করছে সরকার। সেই কাজে ইতোমধ্যে ইতিবাচক ফল পাওয়া শুরু করেছে। সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সাধারণত কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এবং একটি সরকার আরেকটি সরকারের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু গত তিন/চার বছরে সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক সরকারের ওপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রচ্ছন্ন ভাবে একটি অবস্থান গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের আগে এটি একটি বিপদজনক তৎপরতা বলে সরকার মনে করছিল। আর এ সমস্ত ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রচলিত ধারা কূটনীতি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল।
বিশেষ করে যখন বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বা যখন বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস রীতিমতো ঘুমিয়ে ছিল। তারা কোনো দায়িত্বই পালন করেননি। এরপর সেখানে রাষ্ট্রদূত বদল করা হয়। রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তনে কূটনৈতিক তৎপরতার জোর অনেকটা বাড়ে এবং কিন্তু ততক্ষণে সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গেছে। আর এ কারণেই প্রচলিত কূটনীতিতে এই ধরনের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব ছিল না। আর তাই সরকার তখন থেকেই একটা বিকল্প চ্যানেল তৈরি করে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে। আর এই বিকল্প চ্যানেলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার নেতৃত্বে একটি দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রভাবশালী কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সালমান এফ রহমানের এই কাজে সহযোগিতা করছেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত সহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এছাড়াও ওয়াশিংটনে অবস্থানরত বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউসও এ বিষয়ে সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত জিয়া উদ্দিন আহমেদও সালমান এফ রহমানের এই টিমকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন এবং মার্কিন রাজনৈতিক কৌশল সম্পর্কে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে সরকার এর সুফল পাওয়া শুরু করেছে।
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওয়াশিংটনে জ্যাক সুলিভানের বৈঠকটি ছিল পুরোপুরি ভাবে বিকল্প কূটনীতির ফসল। সালমান এফ রহমান এবং তার টিম এই বৈঠকটির আয়োজন করেছিল এবং এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা ছিল খুবই গৌণ। একই ভাবে সালমান এফ রহমান ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আন্ডারে উজরা জেয়ার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সেই বৈঠকটিও ছিল গোপনীয় এবং বিকল্প কূটনীতিক ফসল
নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন মনোভাব পাল্টানো এবং কতগুলো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ঐক্যমত আনার লক্ষ্যে এই বিকল্প কূটনীতি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ধারণা পাল্টে দেওয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সোজাসাপ্টা ভাষায় বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ মনে করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে হল ভোটে যদি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত থাকে তাহলে তাকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা যায়। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের পরে যেন কোনো রকমের চাপ প্রয়োগ না করে বা নানা রকম বিধি-নিষেধ আরোপ না করে সে ব্যাপারেও এই বিকল্প কূটনৈতিক তৎপরতায় তথ্য আদান প্রদান করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ভুল তথ্য যাচ্ছে। সরকারি চ্যানেলে তথ্যগুলো যাওয়া সময় সাপেক্ষ এবং দীর্ঘসূত্রিতা ব্যাপার। এ কারণে বিকল্প চ্যানেলে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের আগে এবং পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন বাংলাদেশের ব্যাপারে একটি সহনীয় অবস্থানে থাকে সে লক্ষ্যেই এই তৎপরতা চালানো হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে তার ইতিবাচক ফল আওয়ামী লীগ পেতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ