• শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন

পান থেকে চুন খসলে ওয়াশিংটন ভিসানীতির কথা বলে: ওবায়দুল কাদের

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৯১ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩

পান থেকে চুন খসলেই ওয়াশিংটন ভিসানীতির কথা বলে— এমন অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবীর কোনও দেশেই ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র বাংলাদেশেই পান থেকে চুন খসলেই আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেবে, ভিসানীতি দেবে— এমন হুমকি-ধমকি দেয়।’

শনিবার (১২ আগস্ট) বিকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়নের মুখ দেখছে বাংলাদেশ। বিএনপি এর সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। দেশের উন্নয়নের তারা প্রশংসা করতে পারে না। সব ক্ষমতার মালিক যেখানে আল্লাহ, সেখানে বিএনপি কীভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাবে।’

বিএনপির মিছিলে দৈর্ঘ্য বেড়েছে ও প্রস্থ কমেছে

আওয়ামী লীগের উন্নয়নে বিএনপির অন্তর জ্বালা বলে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘পরাজয়ের ভয়ে বিএনপির এক দফা খাদে পড়ে মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের সংখ্যা কমে গেছে। তাদের মিছিল-সমাবেশে দৈর্ঘ্য বেড়েছে ও প্রস্থ কমেছে।’

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আর বিএনপি লাফালাফি করে, এটার (নিষেধাজ্ঞা) সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। দেশের উন্নয়নের তারা প্রশংসা করতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিএনপিকে প্রতিপক্ষ ভাবে, আর তারা আওয়ামী লীগকে শত্রুভাবে— সেটার যাত্রা শুরু করেছিল ২১ আগস্ট। ১৫ আগস্ট কিংবা ২১ আগস্টসহ সব হত্যাকাণ্ড এবং ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড জিয়া পরিবারের সদস্যরা।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কী দশা হবে। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে এ দেশের ৭০ ভাগ ভোট শেখ হাসিনাকে দেবে।’ যেকোনও সংকট কিংবা সমস্যায় শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখতে সারা দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পার্লামেন্ট বিলুপ্তি, শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ বিএনপির কোনও দাবি মেনে নেওয়া হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।’

খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী ৬ বার হয় কী করে— এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৫ আগস্ট কীভাবে তার জন্মদিন হয়।’

নিরপেক্ষ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। পছন্দ হলে নির্বাচনে আসুন, না হলে যা ইচ্ছা করুন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘আজকে মির্জা আব্বাস বলে ‘সংবিধান আমরা মানি না’। কেন মানে না, এটার মধ্যে কি কাঁটা আছে? এটা নাকি কাটাছেড়া করেছি, কাটাছেড়া আমরা করিনি, কাটাছেড়া করেছে সেনাপতিরা। প্রথম করেছে জিয়াউর রহমান।’’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘হবে না, তত্তাবধায়ক হবে না। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন না, সংসদ ভাঙবে না। আগুন নিয়ে খেলতে আসবেন না, আগুন নিয়ে খেলতে আসলে প্রতিহত করা হবে। সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির মির্জা ফখরুলের লাফালাফি,  এই বুঝি গেলো শেখ হাসিনার গদি, গদি গেলো। ফখরুল ইসলাম, নেতিবাচক ও বিদ্বেষমূলক রাজনীতির কারণে আজীবন আপনাদের বিরোধী দলে থাকতে হবে। আজীবন বিরোধী দলের খাতায় নামটা লিখে রাখুন।’

কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এরাই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রাদায়িক শক্তিকে আশ্রয়প্রশ্রয় দিয়ে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশকে নতুন করে আফগানিস্তান বানানোর চেষ্টা করছে। ওরা শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে পারে না।’

বিদেশিরা শুধু বাংলাদেশকে পেয়ে বসেছে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ বছর বিশ্বের ২২টি দেশে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশ ছাড়া আমি একটা দেশও খুঁজে পাচ্ছি না— যেখানে বড় বড় দেশগুলো একেকবার প্রতিনিধি, কখনও কংগ্রেসম্যান, মন্ত্রী গিয়ে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে, কোথাও কোনও প্রশ্নের সম্মুীন হচ্ছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ— কী অপরাধ আমাদের গণতন্ত্রের, কী অপরাধ আমাদের উন্নয়নের। গণতন্ত্র আছে বলেই বিশ্ব আজ এত উন্নয়নের মুখ দেখছে। গণতন্ত্র অব্যাহত না থাকলে এত উন্নয়ন সম্ভব হতো না।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের যারা প্রবক্তা, মানবাধিকারের যারা প্রবক্তা, তাদের যদি বলি— ইউক্রেন এক বছরে ৭৫ বিলিয়ন ডলার আপনারা পাঠিয়েছেন, রেজাল্ট কী নিজেরাই অঙ্ক করে হিসাব করুন। ৭৫ বিলিয়ন ডলারে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে? না কারও পরাজয় হয়েছে? সোমালিয়ায় প্রতি দিন মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে, মিনিটে মিনিটে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। কই এখানে তো কিছু করতে পারলেন না।’

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাসান মিলন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ