• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন

বেসরকারি খাত এখন শক্তিশালী, ক্রীড়াক্ষেত্রে এগিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৬৫ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া খেলাধুলা ও সংস্কৃতির বিকাশ সম্ভব নয়। আমি বিশ্বাস করি যে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির বিকাশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও প্রয়োজন। তা ছাড়া এটি বিকশিত হতে পারে না।

বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বিমাসহ অনেক কিছুই করে দিয়েছি। বেসরকারি খাত এখন অনেক শক্তিশালী। তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম সব জায়গায় তুলে ধরতে পারবে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এই সহযোগিতাটুকু করা দরকার।

শনিবার (৫ আগস্ট) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরস্কার-২০২৩ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এবং দুটি সংস্থার মাঝে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২৩’ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা যদি এভারেস্ট বিজয় করতে পারে অথবা এত স্বল্প সুযোগের মধ্য দিয়েও খেলোয়াড়রা ক্রীড়াক্ষেত্রে এত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে পারে, তাহলে এই সুনাম বাড়ানোর জন্য দরকার আরও পৃষ্ঠপোষকতা।

যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের ক্রীড়াবিদরা দেশের জন্য আরও সুনাম বয়ে আনবে ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যাদের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে, আপনারাও কিন্তু একজন ক্রীড়াবিদকে চাকরি দিতে পারেন বা আপনাদেরও একটা ক্রীড়া সংগঠন থাকতে পারে। বিভিন্ন প্রতিভা ছড়িয়ে আছে সারা দেশে। সেসব প্রতিভাকে আপনারা কুড়িয়ে আনেন এবং তাদের একটু সুযোগ করে দেন। আপনারা দেখবেন বাংলাদেশের জন্য এরাই সবচেয়ে বেশি সুনাম বয়ে আনবে।

জাতির পিতাই ক্রীড়াবিদদের জন্য ক্রীড়া ফাউন্ডেশন করে যান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সিডমানি দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দেয়। সেখান থেকে বর্তমানে প্রায় ৫০০ জনকে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের পৃষ্ঠপোষকতা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশনে অনুদান প্রদানে সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা বৃত্তশালী আছেন, ক্রীড়াসেবীদের কল্যাণে এই ফাউন্ডেশনে আপনারাও অনুদান দেবেন। কারণ, আমি জানি আপনাদের অনেক পুরনো খেলোয়াড় রয়েছেন, যারা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদের চিকিৎসার কোনও সুযোগ থাকে না। অনেকে আর্থিক সংকটেও পড়েন। কারণ, খেলাধুলা তো বেশি বয়স পর্যন্ত করা যায় না। কিন্তু তাদের পরবর্তী জীবনটা কেমন হবে, সেটাও একটা বড় কথা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যতক্ষণ আছি দিয়ে যাচ্ছি। যাদের ঘর নেই, তাদের ফ্ল্যাট তৈরি করে দেওয়া বা জমি দেওয়া, খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রদান বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা বা চিকিৎসা করিয়ে বিদেশ থেকে আনা—সব করে যাচ্ছি।

চিরদিন তো আর আমি থাকবো না, হয়তো এভাবে আর কেউ আন্তরিকতার সঙ্গে করবেও না মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কাজেই তাদের ভবিষ্যৎ যাতে ভালো থাকে এবং ভবিষ্যতে তারা ভালো কিছু করে চলতে পারে, সে জন্যই আজ আমাদের বিত্তশালীদের আহ্বান করবো, আপনারা একটু উদ্যোগ নেন বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একটু উদ্যোগ নিন।’

তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন এবং যখন ছিলেন না তখনও খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করে গেছেন। বিশেষ করে আবাহনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত অধিকাংশ খেলোয়াড়কে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন এবং সহযোগিতা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বলেন, অনেক গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের জন্য স্বর্ণ জয় করে আনছে। বিশেষ করে শারীরিক প্রতিবন্ধীরা স্পেশাল অলিম্পিকে স্বর্ণ জয় করছে। তারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনছে। তারা যেন সব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে, সে জন্য আমার সহযোগিতা রয়েছে।

পুরস্কার বিজয়ী হলেন যারা
আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় হকি দলের প্রথম অধিনায়ক আবদুস সাদেক। কৃতী খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদ হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ এবং ভারত্তোলনে সাউথ এশিয়ান স্বর্ণপদক পাওয়া জিয়ারুল ইসলাম। উদীয়মান খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদ হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মুহতাসিন আহমেদ হৃদয় এবং হকি খেলোয়াড় আমিরুল ইসলাম। ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন কালসিন্দুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মালা রানী সরকার এবং তৃণমূলের হকি সংগঠক ফজলুল ইসলাম।

ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন, ফেডারেশন, ক্রীড়া সংস্থা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ আর্চারী ফেডারেশন। ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক ও স্পনসর হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বিএবির পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার এবং চৌধুরী নাফিস সরাফাত। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে খন্দকার তারেক মো. নুরুল্লাহ এবং ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান।

পুরস্কার হিসেবে প্রত্যককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হয়।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান শেখ কামালের জীবন ও কর্মকাণ্ডের ওপর স্মৃতিচারণ করেন।

শেখ কামাল এনএসসি পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে বক্তব্য দেন আবদুস সাদেক ও সাবিনা খাতুন। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ