সাজ্জাদ হোসেন শিমুল, মুরাদনগর
আগামী বৃহস্পতিবার (২৯জুন) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির মাংস কাটার দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি ও মেরামতে শেষ মূহুর্তে শান দিতে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা। সারারাত ধরে টুং টাং শব্দে মুখরিত কামার পল্লী গুলো।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন বাজারের কামার পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে টুং টাং শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খন্ড, আবার কেউ শান দিচ্ছেন ছুরি কিংবা বঁটি, কেউবা আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা। ঈদের আগ দিন পর্যন্ত চলবে এমন কর্মব্যস্ততা। কোরবানির সময় তাদের আয় বেড়ে যায় কয়েকগুন। সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তারা। তবে কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো লাভ না থাকলেও পূর্ব পুরুষের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান অনেক কামাররা।
কামার শীল্পে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির এক মাস আগে থেকেই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। এছাড়া বছরের অন্য সময় বিল্ডিং তৈরির হ্যান্ডেল, হাতুড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরিতে তারা ব্যস্ত থাকেন। কামাররা জানান, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ৫০ থেকে ২০০, দা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, বটি ৩০০ থেকে ৫০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে যেমন অভিযোগ রয়েছে তেমনি কাচামালের উর্ধ্বগতি ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিও নানান অজুহাতও রয়েছে বিক্রেতাদের।
ক্রেতা রফিকুল ইসলাম সহ আরো কয়েকজন জানান, কয়েক দিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে এবং মাংস কাটতে প্রয়োজন চাকু ও ছুরির, সে কারণে দা, বটি ও ছুরি কিনতে বাজারে এসেছি। তবে গতবছরে এসব জিনিসের যে দাম ছিল তার চেয়ে এবারে দাম খানিকটা বেশি।
বিমল কর্মকার ও নয়ন কর্মকারসহ বেশ কয়েকজন কামার শিল্পী জানান, ঈদকে সামনে রেখে প্রায় এক মাস আগে থেকে পশুর মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। লোহার গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে দা-চাপাতি ছুরি বিকিকিনি হয়। লোহার মধ্যে ক্রেতাদের পছন্দ জাহাজ ভাঙ্গা ও বাসের স্প্রিংয়ের লোহার ছুরি-চাপাতি। তবে আগের তুলনায় লোহার দাম বেড়ে যাওয়া ও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে তাদের কাংখিত মুনাফার বিষয়ে অনেকটা শংকা রয়েছে বলেও জানান তারা।