• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ অপরাহ্ন

কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে; আতংকিত তীরবর্তী মানুষ

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ২৫ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪

মাহফুজ বাবু
গত কয়েকদিনের অতিবর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর ভেতরে চরের গ্রামগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি চরের বাসিন্দারা আতংকিত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের ওপরে সহ বিভিন্ন স্থানে। ইতিমধ্যেই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করছেন বলে জানানো হয়। ঝুকিপূর্ণ এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছেন বলেও জানায় জেলা প্রশাসন। গত তিন দিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকষ্মিক এই দুর্যোগের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে লাগাতার ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা ঢলে সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাকড়ী নদীর আশেপাশের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে সেখানকার লাখো মানুষ। অপরদিকে জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে ডাকাতিয়া নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতেও বহু মানুষ গত ২দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে । বুড়িচংয়ের ময়নামতিতে গোমতী নদীর চরের ভেতরের কিং বাজোহুরা গ্রামের ৫শতাধিক পরিবারের সহস্রাধিক মানুষ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পানিবন্দি হয়ে পরে।নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙ্গনের আশংকায় ভীতসন্ত্রস্ত দুই তীরের মানুষ। বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে স্থানীয়রা। এছাড়াও গোমতী নদীর বিভিন্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতে কাজ করে যাচ্ছে । চরের বানভাসি মানুষের জন্য আশেপাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে মাইকিং করা হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকা, দেবিদ্বার এর জাফরগঞ্জ সহ বেশকিছু এলাকায় আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি গ্রামের কয়েকশত পরিবার। জেলার আদর্শ সদর, বুড়িচং, বিপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও তিতাসের দুপাশে চরের ৫৮কি. মি. এলাকায় বিভিন্ন গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাসকারী ১০ সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে নদীর বাঁধ, বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র সহ নিকটস্থ স্বজনদের বাড়িতে। কৃষি ফসল, পুকুর ও ফিসারির মাছ এবং চরের বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা।জানা যায়, গোমতী চরে ও দুই তীরের বাঁধের ভেতরে বসবাসকারী দের হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। পানির স্রোতের তোড়ে ভেঙে গেছে গ্রামীন পাকা আধাপাকা ও কাঁচা সড়কগুলো। কৃষিজমি, মসজিদ, মন্দির পুকুর, ফিসারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে গোমতীর বানের জলে। এ রিপোর্ট লেখার সময় বুধবার সন্ধ্যার পরেও বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিলো। বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।জেলা আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২০১৪ মিলিমিটার। আগামীকাল পর্যন্ত অব্যহত থাকতে পারে এ বৃষ্টিপাত।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকেই বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। বুধবার দুপুর পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। একই সাথে স্রোতও বেড়েছে দ্বিগুণ। বৃষ্টিপাত না কমলে কখন নাগাদ এই পানি নামবে সেটির কোনো নিশ্চয়তা নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ