মোঃ আবু জাফর মন্ডল,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে সূর্যমুখীর চাষাবাদ। গতবছর ভাল ফলন পাওয়ায় চলতি রবি মৌসুমে বিভিন্ন ডাল, সব্জির সাথে তেলবীজ জাতীয় সূর্য্যমুখীর চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের মাঝে। ডিসেম্বর মাসে লাগানো সুর্য্যমূূখীউপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে এখন সবুজ গাছেহলুদ হাসি ছড়াচ্ছে। মাঠজুড়েসূর্য্যমুখীর হলদে আভায় বিমোহিতদর্শনার্থীরাও। সকালে বিকেলে প্রিয়জনদের সাথে ছুটছেন ফুলেরসাথে ছবি তুলতে। ধান, ভুট্টা, বাদাম, আলু ও টমেটোরমতো অর্থকরী ফসল হিসেবে সরকারসূর্যমুখী চাষে উৎসাহ দিচ্ছেন।আর তাতেই প্রচলিত ফসলের চাষাবাদের পাশাপাশি বিকল্প ফসল চাষে ঝুঁকছেনকৃষকেরা। সৌন্দর্যে ভরা এই তৈলবীজজাতীয় ফসল সূর্যমুখী ফুলেরয়েছে বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনা। একারণে কৃষি বিভাগের প্রণোদণায়সূর্যমুখী চাষও বাড়িয়েছেন চাষিরা। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি, রাজাহার, শিবপুুর শালমারা ও পৌরসভার কিছুএলাকাসহ এবার বেশ কিছুজমিতে চাষ হয়েছে সূর্য্যমুখীর।উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এই এলাকায় সূর্য্যমুখীর চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায়এটা খুব লাভজনক। এবছর কৃষি পুনর্বাসন প্রণোদনারআওতায় উপজেলায় ৯০ জন কৃষককেবিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ এবং সারবিতরণ করা হয়। আর১২.৫ হেক্টর জমিতেসূর্য্যমুখী চাষ করা হয়েছে।ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। ফলনভালো হওয়ায় কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল চাষে আগ্রহপ্রকাশ করছেন। উৎপাদন সুবিধা ও বাজারদর বিবেচনায়বর্তমানে অনেক কৃষকই সূর্যমুখীচাষে আগ্রহী হচ্ছেন।গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ি ইউনিয়নের বাগদা এলাকার কৃষক মো. মনসুরআলী জানান, তিনি চলতি বছর৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীফুলের চাষ করছেন। আগেএসব জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করতেন।এবারই প্রথম কৃষি বিভাগের সহায়তায়সূর্যমুখী ফুল চাষ করছেন।ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ গাছেফুল ফুটেছে। কৃষি বিভাগের সাথেকথা বলে তেলের বীজএবং তেল- যেটি বিক্রিকরলে লাভবান হবেন, সেটিই বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।এবার ফলন ভালো হলেপ্রতিবছরই সূর্যমুখী ফুল চাষ করবেন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিলাসকুমার ভট্টাচার্য্য জানান, ডিসেম্বর মাস থেকে কৃষকরাজমিতে সূর্যমুখী ফুলের বীজ রোপন শুরুকরেন। রোপনের দুই মাস পরগাছে ফুল ফুটে। আরফোটার পর ফুল পরিপক্কহতে সময় লাগে আরওঅন্তত ১৫দিন। আগামী এপ্রিল মাস থেকেই কৃষকরাতাদের ফসল ঘরে তুলতেশুরু করবেন।এবার কৃষি বিভাগেরসহায়তায় পৌর এলাকার ৮বিঘাজমিতে সূর্র্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন বজরুলরশিদ নাদিম। তার সাথে কথাবলে জানা যায় গতবছরও সূর্র্যমূখীর আবাদ করে লাভবানহয়েছেন। গতবারের চেয়ে এবার অধিকপরিমাণ জমিতে সূূর্যমুখীর চাষ করেছি। বাগানগুলোতেএখন দর্শনার্থীরা সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করছেন। দর্শনার্থীদেরউপস্থিতি ভাল লাগলেও কিছুটাবিড়ম্বনায়ও পড়তে হয়। কারণঅনেক দর্শনার্থী বাগান থেকে ফুল ছিঁড়েক্ষতি করেন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দরেজা-ই-মাহমুদ বলেন, কৃষকদের সূর্যমুখী ফুল চাষে উদ্বুদ্ধকরতে প্রণোদনা হিসেবে সার ও বীজদেয়া হয়েছে। বীজ রোপনের পরথেকে আমরা নিয়মিত তদারকিওকরছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবারফলনও ভালো হবে। বীজআহরণ এবং তেল উৎপাদনএ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।