কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও কলা ও মানবিক অনুষদের সাবেক ডিন ড. জিএম মনিরুজ্জামান। মুখ্য আলোচক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, ভাষা আন্দোলন না হলে আমরা কেমন থাকতাম এই প্রশ্নের উত্তরেই সব লুকিয়ে আছে। মাতৃভাষার প্রতি দরদ থাকতে হবে, যেটা অন্যান্য দেশের আছে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের ভাষার প্রতি হীনমন্যতা কাজ করে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন বাংলার শিক্ষককে প্রবন্ধ ইংরেজিতে কেন লেখা নয়, এই কথা জিজ্ঞেস করা হয়। তাকে ইংরেজিতে লিখতে বাধ্য করা হয়। ইংরেজিকে সহযোগী হিসেবে রাখতে হবে কিন্তু সব লেখা বাংলায় লিখতে হবে এরকম যদি শর্ত থাকতো তবে আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে যথাযথ সম্মান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কেও এগিয়ে নিতে পারতাম।তিনি আরো বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়া হয় ইংরেজিতে, সকলকে উদ্বুদ্ধ করা হয় ইংরেজি শিখতে। যে এই কাজ করছে আমার তার প্রতি আহ্বান থাকবে যে আপনি বরং বিদেশেই চলে যান, সেখানেই থাকেন। বাঙালি, বাংলা ভাষা, বঙ্গবন্ধু এগুলো একই রেখায় রাখতে হবে আর যদি না রাখা হয়, কিংবা তিনটির একটিও একটু নড়বড়ে হয়ে যায়, তবেই আমাদের জাতি হিসেবে নিচে নেমে যেতে হবে।’শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, অমর একুশে আমাদেরকে শেখায় মাথা নত না করা, শক্তি সাহস দিয়ে এগিয়ে চলার। ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা একে অপরের পরিপূরক। একুশের চেতনা হচ্ছে অন্যায়রে প্রতি প্রতিবাদ করা, বৈষমের প্রতি প্রতিবাদ করা, যেকোনো রাহাজানি, যেকোনো দুর্নীতি, অনিয়ম সেগুলার প্রতি প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হীরক রাজার দেশে পরিণত করা হচ্ছে। বিভাগ ও হলগুলোর উন্নয়নের জন্য ইউজিসি থেকে স্পেশাল কোনো বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব দিচ্ছে না। মাননীয় উপাচার্য তার দপ্তর এবং ভিসি বাংলোর সংস্করণের জন্য ইউজিসিতে দেড় কোটির প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। ইতিমধ্যে ৫০ লাখ টাকা মাননীয় উপাচার্য দপ্তর ও বাংলোর উন্নয়নের জন্য আনা হয়েছে। এতে করে আমার কোনো আপত্তি নেই কিন্তু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন, বিভাগ ও হলের উন্নয়নের জন্য কী বরাদ্দ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর মান বাড়ানোর জন্য কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। শিক্ষকরা যেন কোনো প্রতিবাদ না করতে পারে সেজন্য তাদেরকে ক্লাস এবং ল্যাবরেটরিতে আবদ্ধ করে রাখতে চাচ্ছে।উক্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. শামীমুল ইসলামসহ বর্তমান শিক্ষক সমিতির কমিটির নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।