• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ-ভারত নো’ম্যান্সল্যান্ডে ঢিলেঢালা ভাবে উদযাপিত হলো, আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ১৩৫ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মোঃ জাকির হোসেন,বেনাপোল(শার্শা)প্রতিনিধি:
২০০০ সাল থেকে বেনাপোলের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন-সরগম সংগীত একাডেমীর উদ্যোগে, গত ২০০৭ পর্যন্ত, জমজমাট ভাবে দু’দেশের বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক সংগঠন কে সাথে নিয়ে একুশ উদযাপন করে আসছিলো, গত ২০০৮ থেকে রাজনৈতিক ভাবে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত একুশের মঞ্চে, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা,কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য-নাট্য ও জাতীয় পর্যায়ের নামীদামী সংগীত শিল্পীদের পরিবেশনায়, ভাষার গান, দেশাত্ববোধক,বাংলা গান দিয়ে একুশের অনুষ্ঠান সমাপ্তি করা হয়। এবারই তার ব্যতিক্রম ছিলো, এই প্রথম ঢিলেঢালা ভাবে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে উদযাপিত হলো আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস। অমর একুশে,দুই বাংলার মিলন মেলায় দুদেশের মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেত্রীবৃন্দের উপস্থিতিতে, নোম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় দুই দেশের দুইটা পৌরসভার সমন্বয়ে (বেনাপোল ও বনগাঁ (ভারত) পৌরসভার মেয়র,কাউন্সিলার সহ দু’দেশের বাংলা ভাষা প্রেমীদের মাঝে মিষ্টি ও বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী বিনিময় হয়।বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে রোজঃ বুধবার বেলা সাড়ে ১০ টার সময়, উভয় দেশের নেত্রীবৃন্দরা উপস্থিত হয়ে, দু’দেশের শূন্যরেখায় অস্থায়ী শহীদ বেদীতে এক সঙ্গে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এসময় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন যশোর/৮৫ শার্শা-১ আসনের সংসদ সদস্য, শেখ আফিল উদ্দিন এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বিধায়ক (এমএলএ) শ্রী গোস্বামী। তবে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের নিরপত্তা ব্যবস্থা ছিলো অত্যান্ত জোরদার।প্রতিবছর বেনাপোল সীমান্তে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন হতো অত্যান্ত জাঁকজমক পুর্ণ ভাবে। এবছর তার ব্যতিক্রম হয়েছে। কোন রকম উৎসব ছাড়া দুই বাংলার যৌথ উদ্যেগে এবার উদযাপন হলো না অমর একুশ। এতে করে স্থানীয় সাধারন জনগন সহ প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ এর মনে ক্ষোভের দানা বেধেছে। এই দিনটার জন্য দেশের অনেক মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনত একটি বছর। কারন এই দিনে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে আসত দুই দেশের অনেক গুনিজন। অনেক শিল্পী সাহিত্যক,কবি সঙ্গীত শিল্পী, নৃত্য শিল্পী। নিপুন ভাবে আল্পনা একে সাজাতো সীমান্তকে । এখানে একই মঞ্চে হতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর আলোচনা, কবিতা, গান, ও নৃত্য। এবার এসব আয়োজন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ দেশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রেমীরা।ভারত গামী খুলনার পাসপোর্ট যাত্রী অমারেশ মজুমদার বলেন, প্রতিবছর এই দিনে বেনাপোল আসতাম একুশ উদযাপন করতে। এখানে দুই বাংলার মিলন মেলায় নোম্যান্সল্যান্ডে কানায় কানায় ভরে যেত মানুষ। সারাদিন ব্যপি আলোচনা শেষে চলত বাউল সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, ভাটিয়ালী, জারি সারি লালন সঙ্গীত সহ নানা ধরনের গান। মাঝে মাঝে থাকত নৃত্য। কোলকাতা, বঁনগাও, ঢাকা ও খুলনার শিল্পীরা ও এখানে উপস্থিত থাকত। দুই বাংলার মানুষ আন্তর্জাতিক এ মাতৃভাষাদিবসটিকে বেগবান করে তুলত। যে কোন উৎসব এর চেয়ে এই উৎসবটি ছিল বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডের বড় উৎসব। আজ কালের পরিক্রমায় হয়ত হারিয়ে যাবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শুধু বই পুস্তকে পড়বে কিন্ত এর গুরুত্ব হয়ত জানবে না।যশোর এর সাংস্কৃতিক শিল্পী অরুন গোস্বামী বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তথা বিশ্ব আজ যে ভাবে এই ভাষার গুরুত্ব দিচ্ছে একদিন হয়ত আমরা তা উদযাপন না করতে দিনে দিনে সব হারিয়ে যাবে। তাই সকল রাজনৈতিক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের কে এগিয়ে আসতে হবে, অন্তত প্রতিবছর একুশ উদযাপনের জন্য। শার্শা উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং সামাজিক-সাংস্কৃতি সংগঠন গুলাএই দিনটি উদযাপন করলেও দুই রাষ্ট্র মিলে উদযাপন করলে হবে ব্যতিক্রম। বেনাপোল চেকপোষ্টের যায়যায়দিন পত্রিকার, সাংবাদিক, জিএম আশরাফ বলেন, প্রতিবছর ভৌগলিক সীমারেখা পেরিয়ে উভয় দেশের ভাষা প্রেমীরা এক হয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন এর জন্য। সারাদিন উৎসব শেষে দুই বাংলার মানুষ একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আবেগে আপ্লুত হয়ে বিদায় বেলায় একে অপরে জড়িয়ে ধরে,কান্নায় ভেঙ্গে পড়ত। একে অপরের সাথে মোবাইল নাম্বার বিনিময় করে গড়ে তুলত বন্ধুত্ব। এবার এ উৎসব পালন না হওয়ায় দুদেশের মানুষ নানা মন্তব্য করছে। কেউ বলছে অনেক অর্থ অপচয়, কেউ বলছে নিরাপত্তার ব্যাপার রয়েছে। আমরা কোন কিছু চাই না আমাদের দাবি প্রতিবছর যেন রাষ্ট্রীয় ভাবে দিনটি যথাযথ ভাবে উদযাপন হয়।তবে নোম্যান্সল্যান্ডে মাতৃভাষা দিবস সাঢম্বরে উদযাপন না হলেও বেনাপোল শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজ অফিস আদালত বিভিন্ন সংগঠন শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুস্প স্তবক অর্পন করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ