• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন

সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন, হুমকিতে কোটি টাকার সেতু

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ১৭৩ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৪

তানভীর আহাম্মেদ,স্টাফ রিপোর্টার:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় নির্মাণাধীন সেতুর মেয়াদ শেষ হলেও শেষ হয়নি সড়কসহ সেতু নির্মাণ এতেই বিভিন্ন এলাকার জনগণসহ শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। আর তড়িঘড়ি করে নির্মাণাধীন সেতু ও রাস্তার কাজ শেষ করতে ঠিকাদার সেতুর নিচ থেকে নিয়ম না মেনেই বালু ও মাটি উত্তোলন করে সেতুর রাস্তার কাজ করার পাশাপাশি চলছে বৈধভাবে বিক্রি অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাবাসী রয়েছেন চরম আতংকে । উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর থেকে হেলিপ্যাড দিয়ে খানসামা উপজেলাতে আসতে ভুল্লির নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুর উদ্বোধন করার আগেই সেতুতে চলাচল করা নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেকু (খনন যন্ত্র) দিয়ে মাটি কাটাতে ঝুঁকিতে পড়েছে সেতু । আর সি সি গার্ডার ৬০ মিটার ব্রীজ তৈরির ব্যয়ে ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ৮৮ হাজার ৩২৬ টাকা। আর সেই সেতুর নিচ থেকে নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে মাটি উত্তোলন করে ওই সেতুর রাস্তা নির্মান করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিএম (জিভি)।এতে সেতুর নিচে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও যে কোন সময় সেতুর পিলারের নিচ থেকে মাটি ধ্বসে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরে ওই ঠিকাদার নিয়ম না মেনেই সেতুর নিচ থেকে মাটি তুলে ওই সেতুর সড়ক নির্মাণ করছেন। সেতুটি কতদিন টিকবে বলাবাহুল্য । স্থানীয় মাসুম নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অবৈধভাবে মাটি তোলা বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত ভূল্লী নদী। স্থানীয় লিটন ইসলাম নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি নদী থেকে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করার ফলে সেখানে গভীর খাল এর সৃষ্টি হচ্ছে । আর নদীর পাশে তার নিজস্ব জমি থাকায় ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তাকে বেশ কয়েকবার বাঁধা দিলেও তিনি কোন বাঁধাই তোকায়াক্কাই করে না। তাই এ মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থা আইন, ২০১০-এর চার নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিপণনের উদ্দেশে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা- বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এই ধারার খ উপধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত সীমানার মধ্যে বালু ও মাটি তোলা নিষিদ্ধ। অথচ এই আইন না মেনে দমদমা সেতুর নিচ থেকেই মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিএম (জিভি)এর স্বত্বাধিকারী ফয়জুল বলেন, ব্যাচ ঢালাই পর্যন্ত আমার নিজস্ব মাটি ছিল সেটি উঠাইছি। এর বাইরে আমি মাটি উত্তোলন করিনি। আমি যে মাটি বা বালু ঢুকাইছি ওইখানে ওটাই বের করেছি। আমার তো আইন জানার দরকার নাই যে, আমি কয় কিলোমিটার পর্যন্ত খুঁড়তে পারবো।উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আমার জানামতে ব্রীজের পাশে জমির মাটি কিনে রাস্তা করছে। সে সেখানে গর্ত করেছিল সেই গর্তের মাটি রাস্তায় দিচ্ছে সেটা আমি নিজে গিয়ে দেখেছি। এরপর আমি তাকে মাটি কাটতে নিষেধ করি এবং সে বন্ধ করে দেয়। সে তার নিজস্ব মাটি রাস্তায় দিতে পারবে কিন্তু দু পাশের জমির উপরে লেভেলের মাটি নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যদি মাটি কাটে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত নই। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। যদি অনিয়ম করে থাকে তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ