শীতে কাঁপছে সারা দেশ। বিপর্যস্ত জনজীবন। দেশের ২৪ অঞ্চলের তাপমাত্রা আজ রবিবার (১৪ জানুয়ারি) ১২ ডিগ্রির নিচে নেমে গেছে।
আজকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ঢাকায় সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান এখন মাত্র ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে রাজধানীতে বেড়ে গেছে শীতের তীব্রতা। সুর্যের মুখ দেখা তো দূরের কথা, কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজধানী। আগামী শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত আবহাওয়া এমনই থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসলে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। এই হিসাবে রবিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৬ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, অর্থাৎ তাপমাত্রার ব্যবধান মাত্র ৩ ডিগ্রি।
জানা যায়, এই পার্থক্য যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে, তাহলেই শীতের অনুভূতি বাড়তে থাকে। আর যদি পার্থক্য পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে তবে শীতের অনুভূতি প্রকট থেকে প্রকটতর হয়। অর্থাৎ হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। ঢাকার মতো দেশের প্রায় বেশিরভাগ জেলায় সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য আজ অনেক কমে যাওয়ায় শীতের প্রকোপ বেড়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, ‘তাপমাত্রা কমেছে কিন্তু সব এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বইছে না। দেশের চার জেলায় এখন শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ঢাকায় শীতের অনুভূতি বেশি হওয়ার কারণ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়া। দেশে অন্যান্য এলাকায়ই তাপমাত্রার পার্থক্য এখন কম। তাই শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই আবহাওয়া থাকতে পারে৷ এরপর তাপমাত্রা হালকা বাড়তে পারে। তবে পুরো জানুয়ারি মাসজুড়ে শীতের তীব্রতা থাকতে পারে।’ আগামী দুই তিন-দিনের মধ্যে কোথাও কোথাও মেঘের সৃষ্টি হতে পারে, তখন হালকা বৃষ্টি হলে কুয়াশা কিছুটা কাটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৫, যা শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ছিল দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া আজ ১২ ডিগ্রির নিচে থাকা অঞ্চলগুলো হচ্ছে— পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ায় ৮.৮, চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহীতে ৯.৭, নীলফামারির ডিমলা, সৈয়দপুর ও পাবনার ঈশ্বরদীতে ১০.২, রংপুরে ও নওগাঁর বদলগাছিতে ১০.৩, বরিশালে ১০.৫, যশোরে ১০.৮, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১১.৩, সাতক্ষীরায় ১১.৪, ভোলা, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ১১.৫, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১১.৬, গোপালগঞ্জে ১১.৮, কুমিল্লা, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, বগুড়া ও মাদারীপুরে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।