• শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২১ অপরাহ্ন

চারপাশে ময়লা-আবর্জনা রেখেই চলছে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ঝাড়মোছ

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ১০৩ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

১৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে এদিন রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে আসবেন হাজারো মানুষ। সারা বছর অনেকটা অবহেলায় পড়ে থাকলেও ১৪ ডিসেম্বরের আগে ধোয়ামোছা ও সাজগোছ করা হয় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে গড়ে ওঠা এই স্মৃতিসৌধ। সরেজমিনে দেখা গেছে, বুদ্ধিজীবী দিবসকে সামনে রেখে স্মৃতিসৌধের চত্বর ধোয়ামোছা করা হলেও প্রবেশপথের আশেপাশে জমে আছে প্রচুর ময়লা-আবর্জনা।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়,  স্মৃতিসৌধের সামনের খোলা জায়গায় জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা সাফ করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। পাশেই জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ থেকে সিটি করপোরেশনের ট্রাকে করে ময়লা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে স্মৃতিসৌধের সামনের রাস্তা এবং ফুটপাতজুড়েও প্রচুর আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া সামনের রাস্তার ফুটপাত ঘেষে বেশিরভাগ জায়গায় দীর্ঘদিনের জমে থাকা পানির সঙ্গে ময়লা ও আবর্জনা মিলেমিশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্মৃতিসৌধের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করা হলেও বাইরের এদিকটা এভাবেই থেকে যাচ্ছে।

বাইরে ময়লা-আবর্জনা থাকলেও স্মৃতিসৌধের ভেতরের অংশে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। প্রবেশপথ থেকে শুরু করে মূল বেদি পর্যন্ত পুরো অংশ এরইমধ্যে ধুয়ে-মুছে সাফ করা হয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভ সেজেছে নতুন রঙে। নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ করছেন টেকনিশিয়ানরা। এ ছাড়া নানা রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন সাজিয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও চলছে পুরোদমে।

পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত মজিবুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহ ধরেই এখানকার ময়লা-আবর্জনা সরানো এবং ঝাড়ামোছার কাজ করছেন তারা। পাশেই ফুটপাতে থাকা আবর্জনাগুলো না সরানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই কাজ করছি। এক বছরে জমে থাকা ময়লা তো এক সপ্তাহে সরানো সম্ভব না। তাই স্মৃতিসৌধের চত্বরসহ প্রাচীর লাগোয়া জায়গায় জমে থাকা ময়লাগুলো আগে সরানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক (সিআই) মো. রোকনুজ্জামান জানান, কিছুদিন আগে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকেরা এখানে রাস্তা কেটে কাজ করেছিল। সে সময়ের মাটির স্তূপের ওপর স্থানীয় লোকজন আবর্জনা ফেলে স্মৃতিসৌধের সামনের পুরো এলাকা ময়লার ভাগাড় বানিয়ে ফেলেছে। গত কয়েকদিনে এখান থেকে ২০ ট্রাকেরও বেশি ময়লা সরানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

বুদ্ধিজীবী দিবস আসলে পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হলেও বাঙালি জাতির আবেগের এই স্থাপনাটি সারা বছর  অবহেলায় পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে রোকনুজ্জামান বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে যতটা সম্ভব আমরা পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। এরপর থেকে নিয়মিত আমরা পরিচ্ছন্নতার কাজ করবো। এছাড়া স্মৃতিসৌধ ঘিরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন অস্থায়ী দোকান, নার্সারি এবং পাশ্ববর্তী কাঁচাবাজরের আবর্জনা এখানে ফেলা হয়। আর যেন তা না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করবো।’

এদিকে দিবসটি ঘিরে এরইমধ্যে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্মৃতিসৌধের আশপাশের এলাকায় সর্বসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধ এলাকায় শুধুমাত্র সিটি করপোরেশন ও গণপূর্ত অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকবল, বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত শ্রমিক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

গণপূর্ত অধিদফতরের উপ-পরিচালক ও রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের ব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে আমরা সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাক ও সিভিল পুলিশ স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া স্মৃতিসৌধ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় স্মৃতিস্তম্ভের পেছনের দিকে আটটি এবং সামনের অংশে ১০টি সিসি ক্যামেরা নতুন করে বসানো হয়েছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ