হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কবে থেকে শুরু হবে— সে বিষয়ক কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা এখনও আসেনি; তবে বিরতি শেষে গাজা উপত্যকায় ফের ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযান শুরু করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।
হামাসের এই হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে সেই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ হাজার। আর গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন।
যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছিল, তাদের জিম্মায় প্রায় ২৫০ জন ইসরায়েলি রয়েছে। তবে পরে হামাস ঘোষণা করে, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার কারণে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন জিম্মি।
গত সপ্তাহে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতার ভিত্তিতে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠায় কাতারে অবস্থানরত হামাসের হাইকমান্ড। সেখানে বলা হয়, যদি ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি, কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি, উপত্যকায় ত্রাণপণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ এবং আহত বেসামরিকদের উপত্যকার বাইরে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দেয়— তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে ৫০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস।
প্রথমদিকে এই প্রস্তাব আমলে না নিলেও জিম্মিদের পরিবার, দেশের জনগণ ও বহির্বিশ্বের চাপে মঙ্গলবার সেটি অনুমোদন করে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। আইডিএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন করনিকাস মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামাস যদি ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১৫০ জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবারের ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটা (হামাসের প্রস্তাব) মেনে নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন ছিল, কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’