• শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন

বঙ্গবন্ধু টানেলে বারবার দুর্ঘটনা, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৮১ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা প্রান্তে ছুটছে একটি মাঝারি আকারের যাত্রীবাহী বাস। সামনে কয়েকটি প্রাইভেট কার। বাসটি টানেলে ঢোকার পর থেকেই বেপরোয়া। তার ওপর যাত্রীরা মোবাইলে ছবি ও সেলফি তুলছেন হুড়োহুড়ি করে। ওই সময় চালকও খেই হারিয়ে ফেলেন। বাসটি টানেলের মাঝ পর্যন্ত যায় দ্রুতবেগে। এরপর ঠিক সামনে থাকা কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি। মুহূর্তেই দুমড়ে

এর আগে উল্লেখ করার মতো আরও অন্তত তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে টানেলের ভেতরে-বাইরে। মোবাইলে ছবি ও সেলফি তোলায় হুড়োহুড়ি, নির্ধারিত গতির (ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার) চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালানো এবং টানেলের ভেতরে যানবাহনের গতিনিয়ন্ত্রণে গতিরোধক না থাকাকে দুর্ঘটনার কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। আর টহলের জন্য সার্জেন্ট ও কনস্টেবল থাকলেও ডেডিকেটেড গাড়ি না থাকার কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টানেল প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (টোল ও ট্রাফিক) তানভীর রিফা বলেন, ‘পরপর কয়েকটি দুর্ঘটনার কারণে আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করেছি। ঘন ঘন এ ধরনের দুর্ঘটনা টানেলের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনার জন্য বাড়তি টেনশন হিসেবে দেখা দিতে পারে।’

যানবাহন চলাচলের জন্য টানেল খুলে দেওয়ার দিনই গত ২৯ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে একটি প্রাডো গাড়ির ধাক্কায় টানেল-সড়কের রেলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আনোয়ারা প্রান্তের টোলপ্লাজার পাশে এ ঘটনা ঘটে। পরে গাড়িটি জব্দ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। টানেল খুলে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই দুর্ঘটনায় নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে টানেলের ভেতরে বেপরোয়া গতিতে গাড়িবহর নিয়ে রীতিমতো রেস দেয় একদল তরুণ। রাতে হলিউড স্টাইলে তাদের কার রেসিং-কাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে এ নিয়ে জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ, বিস্ময় ও সমালোচনার জন্ম হয়। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় সাতটি প্রাইভেট কারের নম্বরসহ অজ্ঞাতনামা চালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এ ছাড়া ১ নভেম্বর যাত্রীবাহী একটি বাস টানেলের ভেতরে চলন্ত প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দিলে কারটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এদিকে গত শুক্রবার বিকেলে ঘণ্টাব্যাপী যানজট সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ ও টানেল কর্তৃপক্ষ। এই যানজট টানেলের ভেতর ও বাইরে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়ায়। এ বিষয়ে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (বন্দর) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনাগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। দুই প্রান্তে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ৩ জন করে ৬ জন সার্জেন্ট এবং ১৮ জন কনস্টেবল কাজ করলেও দায়িত্ব পালনের জন্য ডেডিকেটেড গাড়ি নেই।’ দুই প্রান্তে দুটি গাড়ি খুব দরকার বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বাসের যাত্রী হুমায়ুন কবির বলেন, বাস টানেলে ঢুকলেই যাত্রীরা অস্থির হয়ে যায়। ছবি, ভিডিও এবং সেলফি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে চালকও খেই হারিয়ে ফেলে। আর অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চলাচল করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ