• শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

পাইকগাছার কপিলমুনি মাছ বাজার সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদীর পাড় যেন ময়লার ভাগাড়

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ১১৪ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৩

কপিলমুনি (পাইকগাছা) প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির কপোতাক্ষ পাড়ের বাইপাস সড়কের মাছ বাজার সংলগ্ন এলাকা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে ওই এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসীন্দারা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আছেন।জানাযায়, দক্ষিণের জনপদ কপিলমুনি-তালা’র মানুষের কাছে কপোতাক্ষ নদ ভাগ্যদেবী। এই কপোতাক্ষই এ জনপদের হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন সারথী। কপোতাক্ষ নদের উৎকর্ষ উন্নয়ন আর মরা বাঁচার একান্ত সহচর। গত আড়াই দশক ধরে অনন্য যৌবনা কপোতাক্ষ যখন খর স্রোতার রুপ নিয়েছিলো তখনই দু’পাড়ের মানুষের ভাগ্যাকাশে নেমে আসে চরম দুর্যোগ। উগরে দেয়া পানিতে টানা কয়েক বছর ধরে এ জনপদের মানুষ বানভাসি হয়েছিল। ঘরবাড়ী গাছপালা, ফসলি জমি সব কিছু পানি বন্দি ছিল বছরের পর বছর। অভাব অনাটনে ভিটে ছাড়া হয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। এ জনপদের চরম দুর্দশার কথা অনুভব করে সরকার ২০১৭ সালে কপোতাক্ষ খনন করে এ জনপদের মানুষের পাশে দাঁড়ায়। কপোতাক্ষ আবার প্রান ফিরে পেলে দু’পাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারো তাদের কপালে ভাজ পড়তে শুরু করেছে। কারণ তারা জানান, দেশের বৃহত্তম বানিজ্যিক মোকাম কপিলমুনি বাজারের প্রতিদিন প্রচুর বর্জ্য নদী পাড়ের বিস্তির্ন এলাকা জুড়ে ফেলা হচ্ছে। শুধু কৃষি পন্য দ্রব্যের আবর্জনা নয় এর সাথে পলিথিন, রাইচ মিলের তুষ পোড়নোর ছাই, দইয়ের মালসা, বিভিন্ন প্লাষ্টিকজাত বর্জ্য সহ নানা প্রকার বর্জ্য নদী পাড়ে রাখা হচ্ছে। আর বর্ষা হলেই এসব বর্জ্য নদীতে পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবর্জনার কারণে ইতোমধ্যে বাজার পাড়ের কোন কোন জায়গা জুড়ে কপোতাক্ষের তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে। নদী খননের পর পরই এ সব বর্জ্য নদীতে ফেলা হলেও কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারী নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই কপোতাক্ষের বিশাল এলাকা জুড়ে ভরাট হয়ে যাবে বলে আশংকা করছেন সচেতনমহল।সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু নদী ভরাট হওয়া নয় নদী পাড়ের বিরাট এলাকা জুড়ে এই বর্জ্যস্তুপ পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীর ধারে বাইপাস সড়কে মাছ বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা পঁচা গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। সারাক্ষণ এ দূর্গন্ধ তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কপিলমুনি বাজারে রাস্তা হয়েছে, ড্রেন হয়েছে কিন্তু নির্ধারিত বর্জ্যর স্থান হয়নি কেন? প্রধানমন্ত্রী যখন পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন সেখানে বাজারে বিস্তর জায়গা থাকতেও কেন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত বর্জ্যরে স্থান তৈরী করছে না ? অচিরেই কপিলমুনিতে একটি বর্জ্য স্থান তৈরী করে কপোতাক্ষকে বাঁচানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভয়াবহ বিপর্যয় রক্ষার দাবী জানিয়েছেন এ জনপদের মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা এখানে প্রায় সারাদিন মাছ বিক্রি করি, কিন্তু পাশেই ময়লা আবর্জনার গন্ধে আমাদের দম যেন বন্ধ হয়ে আসে। একটু বাতাস হলেই নাকে কাপড় দিতে হয়।’ মাছ কিনতে আসা প্রতাপকাটী গ্রামের সবুর আল আমীন বলেন, ‘এখানে এত গন্ধ যে বমি আসে, কিন্ত কেউ দেখার নেই। এই আবর্জনা পরিষ্কার করার কোন উদ্যোগও নেই। প্রতি বছর হাট বাজার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সরকার যে অর্থ হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে দেয় সে টাকা যায় কোথায়? ওই টাকার থেকে কিছু ব্যয় করা যায়, তাহলে তো জনদূর্ভোগ কমতো। নগরশ্রীরামপুর গ্রামের সুকান্ত কুমার মনা বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে নদীর ধারে এই বাইপাস সড়কে ব্যায়াম করতে আসি, নদীর ধারে মন ভরে একটু নির্মল বাতাস নিতে পারবো ভাবি, কিন্তু এই ভাগাড়ের ধারে আসলে গন্ধে পেটের খাবার উগ্রে উঠে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ