• শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৪ অপরাহ্ন

তেলের জন্য হাহাকার, চালকদের ভোগান্তি

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৪৩ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজেদের দাবি আদায়ে আজ রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন পেট্রোল পাম্প মালিকদের একাংশ। এ কারণে তেলশূন্য হয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প। ভোগান্তিতে পড়েছেন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা।

মিরপুর-১৪-এর দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার আল আমিন জানান, এখানে শুধু ডিজেল দেওয়া হচ্ছে। অকটেন বন্ধ। কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অকটেন আমাদের রিজার্ভে নেই। তাই শুধু পেট্রোল দিচ্ছি।

ধর্মঘটের কারণে এমনটা করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর প্রভাব তো কিছু পড়েছে। তবে আমাদের এখানে অকটেন নেই।

বাড্ডায় দুটো, যমুনা ফিচার পার্কের কাছে একটাসহ মোট তিনটি পেট্রোল পাম্প ঘুরে এসে মিরপুর-১৪ থেকে বাধ্য হয়েই পেট্রোল নিতে হচ্ছে বলে জানান মশিউর রহমান নামে এক রাইড শেয়ার বাইকচালক। তিনি বলেন, সকালে তেল নেওয়ার জন্য বাড্ডা, যমুনা ফিউচার পার্ক এসব স্থানে ঘুরে আসছি। পাম্পই বন্ধ। এখন মিরপুরে এক যাত্রী নিয়ে এসেছি। এদিকে পাম্প খোলা দেখে এলাম। কিন্তু অকটেন নেই। তাই বাধ্য হয়েই পেট্রোল নিচ্ছি।

মশিউর রহমান ছাড়াও আরও কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক জানিয়েছেন, ঢাকার বেশ কয়েকটি স্থানে পেট্রোল পাম্প বন্ধ। যে কয়েকটি আছে সেখানে অকটেন দিচ্ছে না। শুধু পেট্রোল চালু রাখা হয়েছে।

অকটেন না থাকার বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে দামি প্রাইভেটকার ও বিলাসবহুল গাড়িগুলো। অকটেন না পেয়ে ফিরছিলেন সাইফুল নামে এক ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। তিনি বলেন, ‘আমার এই গাড়িটা সবসময় অকটেনেই চালাই। কখনও পেট্রোল নেই না। কারণ, রিস্ক নিতে চাই না। মালিকের গাড়ি, যদি ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয়, গতি কমে বা থেমে থেমে চলে, তাহলে তো তার দায় আমার। মালিককে জানাইছি। তিনি বলেছেন ফিরে আসতে।

কালশীর সুমাত্রা ফিলিংয়ের কর্মী কবির বলেন, পদ্মা ডিপো থেকে তেল আনি। আজ সকালে আমাদের তিন গাড়ি গেছে। ডিজেল এক গাড়ি, দুই গাড়ি অকটেন। শুনেছি ডিপোর গেটই নাকি খুলছে না। যা তেল ছিল সকাল ১০টা পর্যন্ত দিয়ে শেষ করে ফেলছি। প্রত্যেক গাড়িতে ১৩ হাজার ৫০০ লিটার তেল ধরে বলে জানান তিনি।

এদিকে অনুরোধ করেও তেল পাচ্ছেন না যান চালকরা। ফিলিং স্টেশন ভিড় জমাচ্ছেন তারা। সবারই অভিযোগ কোথাও তেল মিলছে না।

শুভ নামে এক চাকরিজীবী বলেন, শান্তিনগর অফিস থেকে বের হয়ে রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল কয়েক জায়গায় গিয়েছি, কোথাও তেল পাচ্ছি না।

পেট্রোল পাম্প মালিকদের দাবি, ডিজেলের ২ ভাগ, পেট্রোলের ৩ ভাগ এবং অকটেনের ৪ ভাগ কমিশন বাড়িয়ে সাড়ে ৭ ভাগ করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের শিল্প থেকে বাদ দিয়ে কমিশন এজেন্ট ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া পুরাতন ট্যাংক লরি অবসরের সময় ২৫ বছর থেকে বাড়াতে হবে।

এরমধ্যে জ্বালানি মন্ত্রণালয় তাদের কমিশন এজেন্ট হিসেবে গেজেট প্রকাশ করেছে। কিন্তু বাকি দুই দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। ডিপো থেকে তেল উত্তোলন এবং পরিবহন বন্ধ রেখেছেন তারা। এতে অনেক পাম্পে সকাল থেকে বিক্রি হলেও দুপুর গড়াতে না গড়াতেই তেল শেষ  হয়ে যায়। ফলে বন্ধ আছে বিক্রি। আগামীকাল সোমবার (৪  সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এই ধর্মঘট চললে পাম্প সবই বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যাংক-লরি শ্রমিক ফেডারেশনের সেক্রেটারি (ঢাকা) রেজাউল করিম রেজা বলেন, আজ তারা কোনও তেল উত্তোলন করেননি। তাদের সঙ্গে কেউ মিটিংও করেনি।

পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির একাংশের মহাসচিব মো. মিজানুর রহমান রতন বলেন, একপক্ষ দালালি করতেছে। কিন্তু তাদের সংখ্যা হাতে গোনা। তারা পাম্প খোলা রাখলেও লাভ নাই। তেল উত্তোলন তো বন্ধ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ