টাকার বিনিময়ে বিএনপি দুটি চিঠির ড্রাফট নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকার রাজনীতিবিদদের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
রোববার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিযোগ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে দুটো চিঠির ড্রাফট আছে। বিএনপির লোকজন টাকা নিয়ে চিঠির ড্রাফট হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন রাজনীতিবিদের কাছে।
আজ ঢাকা সফররত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের লাক্রোয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন শাহরিয়ার। বৈঠকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই নিয়ে যে কথা উঠেছে, সেটি আলোচনা এসেছে কিনা, সে বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের গর্বের সেনাবাহিনী পুলিশ বাহিনী বা সার্বিক অর্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত শান্তিরক্ষী বাহিনী যেটা গোটা পৃথিবীতে একটি উদাহরণ। অব্যাহতভাবে টানা প্রায় ১০ বছর ধরে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে প্রায় ১৬৯ জন জীবন দিয়েছেন। এই যে অর্জনকে যারা খাটো করে দেখছেন বা এ অর্জনকে ব্যর্থ করে দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন; তারা বাংলাদেশের বন্ধু নন, তারা শত্রু।
তিনি বলেন, যারা এটা করেছেন, তারা কংগ্রেসম্যান, সিনেটর, প্রেসিডেন্ট, প্রাইম মিনিস্টার, ফরেন মিনিস্টার যেই হোক না কেন, তারা আমাদের শত্রু। তাদের যারা প্রমোট করেছেন পয়সা দিয়ে, বাংলাদেশের মানুষের সময় এসেছে তাদের চিনে নেওয়ার। তবে এটা নিয়ে আমাদের রিয়েক্ট করার কোনো কারণ নেই। কারণ এটা আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত যাদের ওপর দায়িত্ব আছে পৃথিবীর মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার, তারা কোনো এক অদ্ভুত কারণে ধারাবাহিকভাবে সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় থেকে শুরু করে অদ্যাবধি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরও চিঠি আসার ইঙ্গিত দিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে নিশ্চিত থাকবেন এ ধরনের চিঠির সংখ্যা বৃদ্ধি হবে।
ইউরোপীয় ছয় সংসদ সদস্যের চিঠির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের পার্লামেন্টের সদস্য যারা কোনো দিন বাংলাদেশে আসেননি, আমার সত্যিই সন্দেহ হয় বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় সেটাও তারা জানেন কি না। অথচ তারা স্টেটমেন্ট দিয়ে দিচ্ছেন।
বিদেশে সরকারের লবিস্ট পিআর ফার্ম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম জানান, আমাদের একটি পিআর ফার্ম আছে। নেলসন মুলিনস। যাদের মাসিক ফি ২০ বা ২৫ হাজার ডলার। আমরা বিজিআর নামে আরেকজনকে এনগেজ করেছিলাম লেখালেখির জন্য, নিউজ পেপার আর্টিকেলের জন্য। তাদের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট আমরা রিনিউ করনি।
তিনি বলেন, যারা সরকারের সমালোচনা করছেন, তারা বা তাদের পরিবার, তাদের ব্যবসায়ীক অংশীদার শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতায় উপকারভোগী। তারপরও যারা এ কাজগুলো করছেন, এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে আমি মনে করি। তার জবাব জাতীয় সংসদ নির্বাচন জনগণ দেবে।
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সংগঠনের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস বক্তব্য দেন।