• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন

মাদকের ভয়াল থাবায় যুব সমাজ ধংসের পথে 

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৩২৬ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩

লেখক, 
মো. হাফিজুর রহমান 
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। 
 সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
একটি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি বাগানকে বিনষ্ট করার জন্য যেমন একটি হুতুম পেঁচাই যথেষ্ট। ঠিক তেমনি তরুণ যুব সমাজকে ধ্বংসের জন্য একমাত্র মাদকই যথেষ্ট। মাদকের ভয়াল দংশনে তরুণ যুব- সমাজ প্রতিনিয়ত ভয়ংকর অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠছে। আমরা প্রতিনিয়ত পত্রিকার পেজ খুললেই দেখতে পাই মাদকের টাকা যোগার করার জন্য ছেলে হয়ে মাকে, বন্ধু হয়ে বন্ধু কে হত্যা করছে। শুধুমাত্র মাদকের মতো ভয়াবহ নেশায় পড়ে তারা এতো ভয়ংকর অপরাধ করছে। এই মাদকের লাগাম টেনে না ধরলে আমাদের যুব সমাজ ধ্বংসের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। সর্বনাশা মাদকদ্রব্য আমাদের গোটা সমাজকে গ্রাস করে চলছে। বিভিন্ন তথ্য সুত্র থেকে জানা যায় মাদক শুধু যুবকদের জীবনই ধ্বংস করছে না বরং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়
পড়ুয়া অনেক তরুণীও মাদকের নেশায় পড়ে তারা তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মাদক হাতের মুঠোয় এসে গেছে। ছেলে-মেয়েরা সহজেই মাদকের নেশায় পড়ে তাদের সর্বসান্ত হারিয়ে ফেলছে। শুধুমাত্র মাদকের নেশায় পড়ে অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ – তরুণী মাদকের টাকা যোগার করার জন্য চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এমনি হত্যার মতো নিকৃষ্ট পথ বেছে নিচ্ছে। আমাদের দেশে যুব  সমাজ কতটা মাদকের নেশায় পড়ে তারা তাদের জীবন নষ্ট করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটা জরিপ আলোচনা করলে আমরা সেটা বুঝতে পারবো, বাংলাদেশে ১৮ বছরের উপরে শূণ্য দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তদের মধ্যে ৮৫ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। না বুঝেই অনেক তরুণ তরুণীও এই ভয়াভহ পথে পা দিয়ে বিপদগামী হয়ে যাচ্ছে। আমাদের তরুণ তরুণীরা কেন মাদকের পথে হাটছে,এই কারণগুলো বের করে সমাধান করতে হবে।
মাদকদ্রব্যর উপর আসক্তির উল্লেখযোগ্য কারণসমূহের মধ্যে কয়েকটি তুলে ধরছি:
১. পারিবারিক অশান্তি কলহ বিবাহ।
২. প্রেম ভালোবাসায় ব্যাঘাত।
৩. বেকারত্বজনিত হতাশা।
৪. মাদক ব্যবসায়ীদের প্রোলভন।
৫. কৌতূহল ও বন্ধুদের আড্ডায় মাদক সেবন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকার
১. মাদকদ্রব্য উৎপাদন আইন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
২.মাদকদ্রব্য ব্যবসা ও চোরা চালান জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির বিধান কার্যকর করা।
৩. প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।
৪. মসজিদ, মন্দির ও গীর্জাসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করা।
৫.পারিবারিকভাবে সন্তানদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা। সন্তান কার সাথে বন্ধুত্ব করছে সে বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা।
সর্বোপরি মাদকাসক্তি একটি সামাজিক ব্যাধি। এটার ভয়াভহতা নিয়ে প্রতিটি সচেতন নাগরিক কে আওয়াজ তুলতে হবে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মাদকদ্রব্যের ভয়াভহতা নিয়ে মানুষদেরকে সচেতন করে গেছেন। রাসূল (স:) বলেন, যে কোন মকদকদ্রব্য সেবন করে, আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের ঘাম, মল-মুত্র পান করাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।(সহীহ মুসলিম) পরিশেষে বলা যায়, মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা বন্ধে ব্যক্তি, পরিবার, সচেতন নাগরিক ও আইন শৃঙ্খলা বাহীনি তথা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা ছাড়া কোনভাবেই সম্পূর্ণ ভাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “মাদকের ভয়াল থাবায় যুব সমাজ ধংসের পথে ”

  1. Md. Yosuf says:

    অসাধারণ লিখেছো প্রিয় হাফিজুর রহমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ