• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন

সাতক্ষীরায় আখ চাষ ঘুরে দাড়াচ্ছে দারিদ্র দুরিকরনে ভূমিকা রাখছে আখ

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৯১ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় বুধবার, ১৪ জুন, ২০২৩

মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরা
আখ আমাদের দেশের অন্যতম অর্থকরি ফসল।গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত আখের সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুস্কর। আখ চাষে প্রসিদ্ধ জেলা হিসেবে যশোর ও কুষ্টিয়ার নাম ছিল আকাশ চুম্বী। সাতক্ষীরার তালা,পাটকেলঘাটা এবং খুলনার চুকনগর এলাকা ছিল আখ চাষের অভয়ারন্য। কিন্তু দেশের চিনিকল গুলোর অধিকাংশ বন্ধ হওয়ায় আখ চাষে ভাটা পড়ার উপক্রম। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা ও তালার অন্যতম যৌলুস আখ চাষ সময়ের ব্যবধানে হ্রাস পাচ্ছে। তবুও থেমে নেই আখ চাষীরা, সামপ্রতিক বছর গুলোতে দেবহাটার সখিপুর, কোড়া, কামটা,রহিমপুর সহ আশপাশের বিলগুলোতে এবং কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা, ভাড়াসিমলা সহ আশপাশের এলাকা গুলোতে উন্নত মানের সামসারা আখ চাষ হচ্ছে। সাতক্ষীরার বৈজ্ঞানিক নাম চেকজাত ৩৯, দেবহাটার মাটকোমরা দৃশ্যত আখ চাষে বিপ্লব এসেছে। এই এলাকার আখ অত্যন্ত স্বুসাদু এবং বৃহৎ আকৃতির দেশের পনেরটি চিনি কলে দেশেই উৎপাদিত আখ ছিল কাচামাল কিন্তু কয়েকটি চিনি কল লোকসানের কারনে বন্ধ হওয়ায় সরবরাহ বা চাহিদার ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়ায় চাষীরা আখ চাষে নিরুৎসাহি হতে থাকে। এরই মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের আখ উদ্ভাবন হওয়ায় চাষীরা আখ চাষে ফিরতে শুরু করে। উচ্চ ফলনশীল জাতের আখ (সামসাড়া) চিনি বা গুড় তেরী অপেক্ষা প্রতি সংখ্যায় বিক্রি করলে চাষীদের মুনাফা হয় বেশী, মৌসুমে প্রতিটি আখ সর্বোচ্চ ৭০/৮০ এবং সর্ব নিন্ম ৩০/৪০ টাকায় বিক্রি হয়। সাতক্ষীরার চাষীরা ও উচ্চ ফলনশীল জাতের আখ চাষে নেমে পড়েছে। ইতি মধ্যে সাতক্ষীরার তালা,পাটকেল ঘাটা,দেবহাটা ও কালিগঞ্জের দিগন্ত বিস্তৃত আখ ক্ষেত গুলোতে দুলছে আখের পাতা,একাধিক আখ চাষীর সাথে কথা বলে জানাগেছে আখের বাজারজাত ও উৎপাদনের সময় একটু বেশী,অন্তত আখ পরিপক্ক হতে কোন কোন ক্ষেত্রে এক বছর সময় অতিক্রম করে,সাধারনত অক্টোবর হতে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত আখ বীজ রোপনের উত্তম সময়। এক মাসের আখ বীজ রোপনের জন্য বিশেষ ভাবে উপযুক্ত বলে মনে করেন চাষীরা। থেমে যাওয়া আখ চাষ আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায়। দারিদ্র বিমোচন এবং কর্মসংস্থানের অন্য তম মাধ্যম বটে আখ। আখ রোপন জমি মালিক,পরিচর্যা,গুড়,চিনি তৈরী,আখ বিক্রি আখের রস বিক্রি সহ আখের উপর শত শত পরিবার যেমন নির্ভরশীল অনুরুপ ভাবে কর্মসংস্থানের মহাক্ষেত্র নির্মিত হয়েছে। আখ পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এবং ঔষধী ফসল হিসেবে জন মানুষের কাছে বিশেষ পরিচিত। আখের গুড়,আখের রস রোগীর পথ্য হিসেবে বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হয়। আখে প্রচুর পরিমান ক্যালরি বিদ্যমান। একই সাথে শর্করা, আমিষ চর্বি ক্যালসিয়াম,ফসফরাস,লৌহ রয়েছে যা মানব দেহের জন্য অতি উপকারী। আখ চাষীরা জানান সব ধরনের মাটিতে আখ চাষ করা যায়। তবে বিশেষ উপযোগী উচু বা মাঝারি উচু জমি কারন পানি জমতে পারে না এই জমিতে। উন্নত ও অধিক ফলনশীল আখের ক্ষেত নিবিড় পরিচর্যায় রাখতে হয়। আখ মিষ্টি বিধায় সঙ্গত কারনেই পোকা মাকড়ের উৎপাত দেখা যায়। বিধায় আখ চাষকে সফর করনেও পোকা মাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা আখের রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরীতে বিভিন্ন ধরনের অপদ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে আখ গুড় বা পাটালির প্রতি যেমন সন্দেহ অবিম্বাস বাড়িয়ে দিচ্ছে অনুরুপ মানবদেহের ক্ষতির কারনে পরিনত হচ্ছে। আখ চাষ বর্তমান সময়ে অত্যন্ত লাভজনক চাষ বিশেষ করে উচ্চ ফলনশীল আখ অধিক লাভবানের ক্ষেত্র নিশ্চিত করে। দারিদ্র দুরীকরনের তাই আখ চাষ অসামান্য ভূমিকা রাখছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ