মিহিরুজ্জামান সাতক্ষীরাঃ
পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। একদা পাটকে সোনালী আঁশ বলা হতো। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে পাটের অপরিসীম ভুমিকা ইতিহাসের অংশ। অবশ্য বর্তমান বছর গুলোতে বিশ্ব বাজারে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের চাহিদার শেষ নেই। দৃশ্যত পাটের হারিয়ে যাওয়া সোনালী অতীত এবং আবারও ফিরতে শুরু করেছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সামপ্রতিক বছর গুলোতে ব্যাপক ভাবে পাট চাষ শুরু হয়েছে। কৃষকরা দিনে দিনে পাট চাষে ঝুকছে সাতক্ষীরার দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ গুলোতে দোল খাচ্ছে সবুজের সমারোহ পাটগাছ। সৌন্দর্য আর অনন্য অসাধারন দোলা দৃশ্য কৃষকের মুখে যেমন হাসি ফোটানোর অপেক্ষায় অনুরুপ ভাবে প্রকৃতির স্নিগ্ধ বাতাসের দুলতে থাকা পাট গাছ কৃষকের ভাগ্যকে দুলিয়ে দুলিয়ে সাফল্যের শিখরে নেবে এমনই প্রত্যাশা কৃষকের। আর মাত্র কয়েক দিন দিন পর পাট কাটার সুবর্ণ সুযোগ সমাগত। আষাড় মাসের শেষে এবং শ্রাবন মাসের শুরুতে পাট গাছ কাটা শুরু হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ডোবা, নালা, মজা পুকুর আর জলাশয়ে বর্ষার পানি জমতে শুরু হবে সেই মহেন্দ্রক্ষনে কৃষকরা পানিতে পাট ভিজিয়ে আঁশ বের করবে। রৌদ্রে সোনালী ফসল পাট আঁশ শুকিয়ে বাজার জাত করবে। আবার অনেকে কুটির শিল্প সামগ্রী তৈরীতে নেমে পড়বে। পাটকাঠি ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, জ্বালানী হিসেবে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় বিধায় আশের ন্যায় পাটকাটির অর্থনৈতিক মূল্য কম নয়। সাতক্ষীরার একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানাগেছে এবার পাট মৌসুমে ভাল উৎপাদনের আশা করছেন তারা। কারন পাটগাছ ভাল হয়েছে। পূর্বের অপেক্ষায় বর্তমান সময় গুলোতে পাট বীজ উন্নতমানের বিধায় গাছের বৃদ্ধি অতি উত্তম। সদ্য শেষ হওয়া ইরি বরো ধান কাটার বিশ পঁচিশ দিন পর জমিতে জো জমি নরম থাকতে থাকতে পাট বীজ বপন করেছে। অপেক্ষাকৃত ভাবে পাট চাষে খরচ কম, ও আগাছা নিংড়ানোই পাট চাষের পরিচর্যা সীমাবদ্ধ। প্রতি বিঘা জমিতে ১০০০ গ্রাম হতে ১২০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। পাটের বহু মুখি ব্যবহার দৃশ্যত এই শিল্পের সুদিন ফিরেছে। পাটের আঁশ থেকে পাটের সুতা ব্যাগ,বস্তা,পর্দা,কার্পেট যেমন তৈরী হচ্ছে অনুরুপ ভাবে পাটের আশ এবং পাটজাত দ্রব্য হতে নানান ধরনের কুটির ও হস্তশিল্প তৈরী হচ্ছে যে পেশায় বিপুল সংখ্যক লোকজন সম্পৃক্ত হচ্ছে অনুরুপ ভাবে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র বিনির্মান হচ্ছে। বেকার সমস্যার সমাধান হচ্ছে। বিশ্ব ব্যবস্থায় বর্তমান সময়ে পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিকল্প ভাবনার ক্ষেত্রে পাটের তৈরী পরিবেশ বান্ধব বস্তা পরিবেশ বাদিদের বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। পাটের বাস্তা অতি সহজেই মাটির সাথে মিশে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন রক্ষা করে অনুরুপ ভাবে মাটি ক্ষয়রোধ করে থাকে। সাতক্ষীরার অর্থনীতিতে পাট অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় পাটের অর্থনৈতিক গুরুত্ব দারুন ভাবে বৃদ্ধি আর এ কারনে পাট চাষের দিকে কৃষকরা ঝুকছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সামপ্রতিক বছর গুলোতে কৃষকরা পাট চাষে বিশেষ ভাবে এগিয়ে চলেছে। প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পৃষ্টপোষকতা। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন নতুন জাতের পাট ও বীজ উদ্ভাবন করেছেন। যে কারনে পাট উৎপাদনে গতি সঞ্চার ঘটেছে। পাট বর্তমান সময় গুলোতে তার পূর্বের সাফল্য জনক সময় অতিক্রম করছে আর এ কারনে পাট পাট শিল্পে পরিনত হয়েছে। পাট জাত পণ্য কেবল অর্থনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে তা নয় নিত্য দিনে ঘর গৃহস্থলির কর্মযজ্ঞে পাটজাত পন্য ব্যবহৃত হোক। সাতক্ষীরার কৃষকরা পাট নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন তা সাফল্যের ক্ষেত্রে পৌছাক।