• শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন

অত্যাবশীক পরিষেবা বিল বাতিল চেয়ে ফেনী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি

স্বাধীন ভোর ডেস্ক / ৯০ বার দেখা হয়েছে
প্রকাশের সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩

মুজাহিদুল ইসলাম জাবের, ফেনী: 
ফেনীতে কর্মরত শ্রমিক সংগঠনগুলো মঙ্গলবার সকালে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল  হাসান এর মাধ্যমে অত্যাবশীক পরিষেবা বিল বাতিল চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন, সম্প্রতি ৬ই এপ্রিল,২৩ জাতীয় সংসদে শ্রম প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের অত্যাবশকীয় পরিষেবা বিল আইন পাশ করেন।অত্যাবশকীয় পরিসেবা বিলের অর্থ হল যেসব দ্রব্য উৎপাদন, সরবরাহ, ভোগ যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় তা দেখা সরকারের কাজ। এই সব পরিষেবাকে বলা হয় অত্যাবশ্যক পরিষেবা। ফলে অত্যাবশ্যক পরিষেবাসংক্রান্ত আইন হলে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু যে কথা বলা হয়, আইন যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয় এবং যেভাবে তার প্রয়োগ করা হয় তার মধ্যে ফারাক দেখতে দেখতে জনগণ এখন সরকারের ঘোষণা শুনলে সন্দেহ করে।এ আইন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার(১৩ জুন) বেলা ১১ টায় জেলাপ্রশাসক বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করে ফেনীর সকল সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক,মিনিট্রাক কাভার্ড ভ্যানের সংগঠন সমূহ। স্মারক লিপিতে প্রথমে ৭০ লাখ শ্রমিকের পক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হয়।এরপর স্মারকলিপিতে  তারা উল্লেখ করেন”  ৬ এপ্রিল ২০২৩ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বা. জা.স বিল নং- ১২/২০২৩ উত্থাপিত এই বিলে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বলতে ১৮টি সেক্টরকে উল্লেখ করা হয়েছে কিন্তু প্রধানত লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে পরিবহণ খাতে। ফলে পরিবহণ খাতের শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যে তাদের উপর কাজের চাপ, নিপীড়ন ও বঞ্চনা আরও বাড়বে কিন্তু প্রতিবাদ করার কোন সুযোগ বা অধিকার থাকবে না। আপনি জানেন, অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল নামে এই বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, “আপাত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইৰে। ফলে এই বিল আইনে পরিণত হলে শ্রম আইনের উপর এই আইন প্রাধান্য পাবে। অথচ শ্রম আইনে বলা হয়েছে- ‘এই আইনের অন্যত্র ত্রিরূপ কিছু নির্ধারিত না থাকিলে, এই আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।’ সে কারণে আমাদের আশঙ্কা যে, এই অত্যাবশ্যক পরিষসেবা বিল আইনে পরিণত হলে তা শ্রম আইনকে অকার্যকর সহজ করে ফেলবে। কারণ, শ্রম আইনের ২০৯ ধারায় শিল্প বিরোধ উত্থাপন, ২১০ ধারার শিল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান আছে। বিরোধ উপেতির সকল পথ বন্ধ হয়ে গেলে ২১১ ধারায় ধর্মতলার বিলান এবং পদ্ধতির উল্লেখ করা আছে। ফলে এই বিল আইনে পরিণত শ্রম আইনে ধর্মঘটের যতটুকু আইনসংগত অধিকার আছে সেটাও বাস্তবে কেড়ে নেয়া হবে। ফেনীর ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন’
পরিসেবা বিল ট্রেড ইউনিয়নের গণতান্ত্রিক কর্ম পরিচালনার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং এই ভূখণ্ডের শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল কেড়ে নেয়ার সামিল। এই বিল আইনে পরিণত হলে তা হবে আইএলও কনভেনশনের স্বীকৃত ধর্মঘটের মৌলিক অধিকার এবং আন্তর্জাতিক সুপারিশের পরিপন্থী। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, একান্ত বাধ্য না হলে ধর্মঘট শ্রমিকরা সাধারণত করে না, ধর্মঘট করতে চাইলে শ্রম আইনের বিধান মেনে করতে হয় এবং বেআইনি ধর্মঘটের বিরুদ্ধে শ্রম আইনেই শান্তির ব্যবস্থা আছে তা সত্ত্বেও অত্যাবশ্যত পরিষেবা বিল উত্থাপন সচেতন শ্রমিকদের কাছে বিস্ময়ের উদ্রেক করেছে এবং শ্রমিক অঙ্গনে অসন্তোষের বীজ বপন করেছে। এজন্য আমরা সকল শ্রমিক সংগঠন গুলো একত্রিত হয়ে এ কালো আইন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।  অটোরিকশা মালিক সমিতির নেতা মোর্শেদা আক্তার মিয়াজী বলেন’পরিসেবা আইন আন্তর্জাতিক পরিবহণ সংস্থার নীতিমালা, সুপারিশ এর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। ফলে এই আইন প্রণীত হলে তা হবে শ্রমিকদের রক্ত শোষন করার মত।আমরা অনতিবিলম্বে এই আইন বাতিলের দাবি করছি।” এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদুল হাসান তার বক্তব্যে বলেন’ শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার্থে নানা আইন প্রনয়ণ করেন।তবে কোন আইনের প্রতি শ্রমিকদের অনাস্থা থাকলে তা অবশ্যই বিচার-বিশ্লেষণ পূর্বক সরকার সংশোধন বা পরিমার্জনের চেষ্টা করেন”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ